“ফাওয়াইলুল্লিল মুছাল্লিন,আল্লাজিনা হুম আন ছালাতিহিম ছাহুন,আল্লাজিনা হুম ইউর’উন”(আফসোস ঐ সকল মুসল্লিদের জন্য, যারা লোক দেখানো নামাজ আদায় করে”)
রাজনৈতিক পদ ব্যাবহার করে চাঁদাবাজি, সরকারী চাকরীকালীন ঘুষ, টেণ্ডারবাজি, মানুষের অর্থ আত্মসাধ, ব্যাঙ্ক খেলাপি,দূর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, এখন বিপদের দিনে কিছু মানুষকে চাল-ডাল দিয়ে ছবি তুলে ফেইজবুকে আপলোড করে দিয়ে নিজেকে দানশীল প্রকাশ করেন ? ভবিষ্যতেও আপনার উদ্দেশ্য ভাল নয়।
আপনি হয়তো ভাবছেন এই সুযোগে সমাজে দানবীর ভাল মানুষ সেজে যাবেন। দানবীর হিসেবে নিজের পরিচিতিটাও বাড়াবেন। আগামীতে নেতা হবেন, বেশ ভাল।তবে আলেমদের কাছে জেনে নিন আপনার এই অবৈধ টাকার দানে কোনো পুন্য নেই। কিন্তু হ্যা, নিজ ঘরে ময়লা থাকলে যেমন পরিচ্ছন্ন কর্মী দিয়ে টাকা খরচ করে পরিস্কার করতে হয় তেমনি ভাবেই আপনার এ দানের মুল্যায়ন।
যেহেতু হারামের টাকায় আপনার বাড়ী গাড়ী অট্টালিকা, তা কেয়ামত পর্যন্ত পরিস্কার করলেও এ ময়লা পরিস্কার হবেনা।কারন আপনিতো ময়লার মধ্যেই ডুবে আছেন।এ ময়লা থেকে বাঁচতে হলে আপনাকে ময়লার ভাগার পুরোটাই পরিত্যাগ করতে হবে।তারপর মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।জীবনে যাদের ঠকিয়েছেন নির্যাতন করেছেন তাদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, তারা বেঁচে না থাকলে তাদের ওয়ারিশদের কাছে যেতে হবে।ঠিকানাতো জানা নেই,কারন যখন দূর্নিতী করেছেন তখন ঠিকানার হিসেব রাখেননি।তাহলে তাদের জন্য আল্লাহর কাছে কাঁদতে হবে,তাদের গুনাহ মাফের জন্যও কাঁদতে হবে, নিজের সন্তান পুষ্যদের সৎ পথের নির্দেশ দিতে হবে।সন্তানরা আপনার হারামের টাকায় উগ্র হয়ে গিয়েছে, আপনার এ সৎ উপদেশ গ্রহন করেনা।করবে কেনো?আপনার প্রতি আল্লাহর রহমত শেষ হয়ে গেছে।কারন যৌবনে আপনি ছিলেন পাপ কামানোর কারখানা।
আরেকটি বিষয় মনে রাখুন ৫ কেজি চাল, আধা কেজি ডাল ২কেজি আলু দিলেন সেটা দু’দিনেই ঐ পরিবারে শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আজকে যাকে সাহায্যের নামে ছবি তুলে ফেইজবুকে আপলোড দিয়ে দিলেন তার সারা জীবনের মান সন্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিলেন।
আপনার জ্ঞান থাকা উচিত গরীব বিত্তহীন হলেও তারও একটি সামাজিক সন্মান আছে। সবারই একটি পারিবারিক ও সামাজিক সম্মান আছে।
আজকে যাকে সাহায্য দেয়ার নামে ভিখারি বানিয়ে ফেইজবুকে ছবি আপলোড করে ছেড়ে দিলেন নিজেকে দানবীর হিসেবে জাহির করার জন্য, কালকে সে কন্যা দ্বায়গস্ত পিতা মেয়ের বিয়ে দিতে গেলে ছেলে পক্ষকে প্রতিবেশীর হয়তো কেহ বলে দিবে মেয়ের বাবা অনুদান খায়।তখন ভিখারির মেয়ের বিয়েটাকে বিয়ে করতে রাজি হবেনা। তখন আপনার এ সামান্য ২দিনের প্রতারনা তার জীবনের সবচেয়ে ক্ষতির কারন হয়ে দাড়াবে।তখন আপনার এই প্রতারনা হবে এক প্রকার করোনাই বটে।
বিয়ে হলেও শশুর বাড়িতে সুখী হতে পারবে কিনা জানা নেই।তবে মনখুলে কথা বলতে পারবেনা মেয়েটি। কাজের ভুল কথার ভুল হলে শশুর বাড়ির লোকজনে খোটা দিয়ে বলবে – তোমার বাবায় এখনো ভিক্ষা করে জীবন চালায়।এ রকম হাজারো উদাহরন দেয়া যাবে।
যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার উদ্দেশ্য আপনার এ দান হয় তবে এলাকার দুস্থ মানুষের খবর নিন।যারা খাদ্যাভাবে আছে তাদের বাড়িতে নিজ উদ্দোগে গোপনে চাল,ডাল পৌছে দিন। আপনার এ দানের কথা সে আজিবন মনে রাখবে।
প্রকাশ্য দান ও গোপনে দানের ক্ষেত্র আছে।
প্রতারনার দানের কোনো ক্ষেত্র বা মাসায়েল কিছুই নাই।মানুষ কিন্তু বোকা নয়, সবাই সবকিছু বুঝে।তফাত শুধু জ্ঞানের ধৈর্যের আত্মত্যাগের ভালবাসার লজ্জার চরিত্রের মানবতার ও এখলাছ আর তাকওয়ার।
সুতারাং সেলফিবাজদের আপনাদের প্রতি অনুরোধ- নিজেকে দানশীল বানাতে গিয়ে, নিজের সন্মান বাড়াতে গিয়ে অসহায় মানুষদের সামাজিক মান-সন্মান ধূলোয় মিশিয়ে দিবেন না।এতে বরং আপনার নিজের জীবনেও কখনো করোনার মত বিপদ আসতে পারে।আর পরোকাল!! বলাই বাহুল্য।
প্রতিদিনবিডি24/একেআজাদ।
Leave a Reply