প্রধানমন্ত্রী বললেন “আপনি ভাতা নেন, একলা এভাবে কতদিন চলবেন”
রমা বললেন, “ছেলে দিয়েছি, স্বামী দিয়েছি, সম্ভ্রম দিয়েছি। তার তো ক্ষতিপূরণ হবে না। ভাতা নিয়ে কি করব!”
ধর্ষিতা হওয়ায় যুদ্ধের পর তাকে একঘরে করে দেয়া হয়। অথচ তিনি পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম নারী স্নাতকোত্তর।
নিজের হাতে বই লিখতেন, সে বই ছাপাতেন, ফেরিওয়ালার মতো বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই ফেরি করতেন, পয়সা যা হতো তাই দিয়ে একলা মানুষটার জীবন চলতো। এই মানুষটির বাড়ি আদতে একটি খড়ের চালার কুঁড়েঘর। যার আশপাশের বাসিন্দা কুকুর, বেড়াল, কাক, পেঁচা।
জুতো পরতেন না রমা। লোকজন জিজ্ঞেস করলে বলতেন, এই মাটিতে আমার ছেলেরা ঘুমায়, জুতো পরে ওদের বুকের রক্তের ওপর পাড়া দিয়ে হাঁটব কি করে !
এই রমা আমাদের যুদ্ধজননী। ৪৫ বছর যিনি খালি পায়ে রৌদ্রতপ্ত পিঁচঢালা পথে হেঁটে বেড়িয়েছেন। নিজের চোখের সামনে সন্তানদের মৃত্যু দেখেছেন, যিনি দু’চোখে দেখেছেন পাকিস্তানের দোসররা মানুষের ঘরবাড়ি দাউদাউ করে জ্বালিয়ে দিতে।
এদেশ থেকে তাঁর নেয়ার কিচ্ছু নেই, দেবার ছিল। দিয়ে গেছেন। তাঁর মৃত্যু লজ্জায় ডুবিয়ে দিয়ে গেছেন গোটা জাতিকে ।
ভেবেছিলেন বই বেচা পয়সায় একটি অনাথ আশ্রম করবেন, তার সে আশা আর পূর্ণ হয় নাই।
এমন কতো রমা চৌধুরী এখনো যুদ্ধ করেন, এখনো খালি পায়ে হেঁটে বেড়ান, কত আজাদের মা সাফিয়া বেগমরা ভাত খান না শতবছর, কত জাহানারা ইমাম আগলে রাখেন রুমিদের মেডেল-ট্রফি।
এঁদের যুদ্ধের কাছে বারবার হেরে যায় বাংলাদেশ, সে হারায় দুঃখ নেই, আছে লজ্জা, আছে গর্ব, আছে প্রেরণা।
মাটিতেই তো ছিলেন আজীবন। কবরে থাকতে অসুবিধে হবে না মায়ের। স্রষ্টা আমাদের মতো নির্মম নন।
৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত আর ২লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে পাওয়া আমার এই সোনার বাংলাদেশ।
বিজয়ের মাসে শ্রদ্ধা ভরে স্বরন করছি সেই সব বীর শহীদানদের। যেখানে থাকুন ভালো থাকুন রমা চৌধুরীরা;
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত ;
প্রতিদিনবিডি২৪/একে আজাদ;
Leave a Reply