আবুল কালাম আজাদ;
ঢাকা-১৪ আসনঃ
সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়ন, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৭, ৮, ৯, ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ড এই আসনের আওতাধীন।২০০৮ সাল থেকে এ আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে আছে।
ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য আসলামুল হক মারা যান গত ৪এপ্রিল, সবে মাত্র ৪ সপ্তাহ অতিবাহিত হলো। এরই মধ্যে ভিড় বেড়েছে নির্বাচনী মাঠে। নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণ না হলেও শুরু হয়েছে দলীয় মনোনয়নের ‘লড়াই’। আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ডজন অধিক নেতা এ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস পরিস্থিতিও তাদের ঠেকিয়ে রাখতে পারছে না। নীতিনির্ধারণী নেতাদের কাছে তদবিরের পাশাপাশি জনসমর্থন আদায়ের জন্য নানামুখী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয়েছেন তারা। কেউ কেউ এরই মধ্যে ফেসবুকে প্রচার শুরু করেছেন।
আসলামুল হক মারা যাওয়ার পর ইতোমধ্যে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। লকডাউনের কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে না পারলেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা বসে নেই। নিয়মিত রান্না করা খাবার, ইফতারী, ত্রান বিতরণের মাধ্যমে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। নীতিনির্ধারক নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ রাখছেন।
সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন প্রয়াত আসলামুল হকের স্ত্রী মাকসুদা হক। দলের একটি অংশ তার পক্ষে নেমেছেন। আসলামুল হকের বড় ভাই জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য মফিজুল হক বেবু জানিয়েছেন, গত বুধবার মনোনয়ন নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে মাকসুদা হকের। মাকসুদা তার স্বামীর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য উপনির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ করছেন।
আসলামুল হকের বড় মেয়ে মাইশা হক বলেন, বাবা মারা গেছেন ৪০ দিনও হয়নি। তবে আল্লাহর হুকুম ও প্রধানমন্ত্রী চাইলে তার মা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচিও এই উপ-নির্বাচনে অন্যতম শক্তিশালী সম্ভাব্য প্রার্থী। তিনি জানান, এই আসন থেকেই তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু। এ কারণে থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা প্রতিদিনই প্রার্থী হওয়ার জন্য তাকে অনুরোধ করছেন।
এস এম মান্নান কচি পোশাক প্রস্তুতকারক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সিনিয়র সহ-সভাপতি। তিনি বলেন, জাতীয় ভাবেই আসনটির গুরুত্ব অনেক। তাই উপ-নির্বাচনে ‘অতিথি প্রার্থীকে’ দলের মনোনয়ন দেওয়া ঠিক হবে না।
আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিন। তিনি জানিয়েছেন, সংরক্ষিত আসনের এমপি থাকাকালে তিনি এই আসনে ‘ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ’ করেছেন। মানুষের বাড়ি বাড়ি গেছেন। এ কারণে তার একটি ‘স্বচ্ছ ইমেজ’ রয়েছে। তৃণমূল নেতাকর্মীরাও তাকে সমর্থন দিচ্ছেন। তা ছাড়া গত সংসদ নির্বাচনে তিনি ছিলেন দলের অন্যতম সম্ভাব্য প্রার্থী। এবার তিনি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলও এই আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। তিনি বলেন, প্রতিদিনই মানুষজন আমার কাছে আসছেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করছেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই বলছি না। প্রধানমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেলে উদ্যোগী হবো।
আওয়ামী লীগের অন্যতম সম্ভাব্য প্রার্থী ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ বি এম মাজহারুল আনাম। তিনিও সাংগঠনিকভাবে বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। তার ভাষায়, তিনি সংসদের গত তিনটি নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবার নিশ্চয়ই তাকে নিরাশ করবেন না। এবিএম মাজহারুল আনাম দারুসসালাম থানা আওয়ামী লীগেরও সভাপতি।
শাহ আলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আগা খান মিন্টুও নির্বাচনে লড়তে চান। তবে তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন না। প্রধানমন্ত্রী তাকে ডেকে নিলে তিনি নির্বাচনে লড়বেন। সেটা না হলে প্রধানমন্ত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন, তার পক্ষেই কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১১নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার দেওয়ান আবদুল মান্নানও সম্ভাব্য প্রার্থীদের মিছিলে রয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি মনোনয়ন চাইবেন। এ জন্য ইতোমধ্যে ফেসবুকে প্রচারণাও শুরু করেছেন। সবার দোয়া চাইছেন।
এ ছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ৭নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর মোবাশ্বের চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হানিফ এবং অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল ও শাহিদা তারেক দীপ্তি। এ ছাড়া এই আসনে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাও প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে ব্যাপক গুঞ্জন রয়েছে।
খুচরা অনেক নাম সর্বশ্ব হীন নেতাও রয়েছে ফেসবুকে ব্যানার ফেষ্টুনে।
প্রতিদিন সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা বাড়ছে।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি আরও প্রকট রূপ নিতে পারে।
তৃনমূলে ইউনিট পর্যায়ে দায়িত্বশীল অনেক নেতা কর্মীদের সাথে আলোচনা করে জানা যায় তারা জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের উপর আস্থা রেখেছেন।
তবে অনেক ওয়ার্ড নেতারা তাদের নিজ নিজ এলাকার প্রার্থীদের নিয়ে কর্মী ও ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য আলাপ আলোচনা করছেন।
প্রতিদিনবিডি২৪/একে আজাদ;
Leave a Reply