অনলাইন ডেস্ক ;
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের খাবারের বিল নিয়ে ওঠা বিতর্কের ব্যাখ্যা দিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলছেন, বিষয়টি পুরোপুরি মিথ্যা।
তিনি বলেন, “এতে কোনো সন্দেহ নাই এটা মিথ্যা প্রচার। এখানে খাবারের জন্য ওই টাকাটা খরচ হচ্ছে না। হোটেল ভাড়ায় বেশি টাকা যাচ্ছে। খাবার ৫০০ টাকা করে প্রতিজনের জন্য। আমরা মন্ত্রণালয় থেকে যে অনুমোদন নিয়েছি, সেখানেও বিষয়টি বলা আছে।”
তিনি বলেন, বুধবার এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে। সেখানে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
করোনাভাইরাস চিকিৎসায় নিয়োজিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩৬৮৮জন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের ‘এক মাসের খাবারের বিল’ ২০ কোটি টাকা আসার ওই খবর কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এলে আলোচনা শুরু হয়।
বিষয়টি সংসদ অধিবেশনে উঠলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গত সোমবার এ নিয়ে কথা বলেন। এক মাসের খাবারের বিল ২০ কোটি টাকা কী করে হয়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে কয়েকজন সাংবাদিকের সামনে ব্যাখ্যা দেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রায় প্রায় ১৫০ জনের মত চিকিৎসক, ২৫০ জনের মত নার্স এবং ১০০ জনের বেশি কর্মচারী ও আনসার সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই স্বাস্থ্যকর্মীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেলে রাখা হচ্ছে।
খাবারের জন্য ৫০০ টাকা করে নির্ধারণ করা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা হোটেলকে বলেই দিয়েছি, খাবার বাবদ এক দিনে ৫০০ টাকার বেশি দিতে পারব না। এটা দিয়েই ম্যানেজ করতে হবে। তারা তাদের মত ম্যানেজ করেছে।
“একদিনে কোনো হোটেলের ভাড়া দুই হাজার টাকা, কোনো হোটেলের ৫০০ টাকা, কোনো হোটেলের আড়াই হাজার টাকা এবং কোনো হোটেলে পাঁচ হাজার টাকাও আছে। হোটেলের ভাড়াই তো ম্যাক্সিমাম খরচ, তারপর হচ্ছে তাদের খাবার ও যাতায়াত।
“আমাদের এখানে যাতায়াতের জন্য প্রায় ১৫টি মিনিবাস, দুটি মাইক্রোবাস ও দুটি বাস রেখেছি। এগুলো দিয়ে প্রতিদিন তিন বেলা তাদের আনা-নেওয়া করা হচ্ছে।”
পরিচালক বলেন, দুই মাসের জন্য কী পরিমাণ খরচ হতে পারে তা মন্ত্রণালয় থেকে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তখন তারা হিসাব করে দেখেছেন- দুই মাসে ২০ কোটি টাকার মত লাগতে পারে।
“এখানে রেলওয়ে হাসপাতাল আছে একটি, সেটিও আমরা চালাচ্ছি এবং তার জন্য এক কোটি টাকা ধরেছি। সেখানে সব মিলিয়ে এক কোটি টাকা লাগতে পারে, আবার নাও লাগতে পারে।
“এটা তো একটা বাজেট। বাজেট তো একটু বেশি করেই আমরা চাই সবসময়। তারপর আমাদের যে বিল এসেছে, সেটা আমরা দেখব। যার যত বিল হবে হোটেলে, আমরা সে অনুযায়ী তাকে পে করব। যেটি থেকে যাবে সেটি আবার সরকারের কোষাগারে জমা চলে যাবে। এটা তো একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।”
নাসির উদ্দিন বলেন, “একজন ভদ্রলোক একটা বক্তব্য দিলেন, সেটি নিয়ে সমগ্র দেশ বিভিন্ন রকম কমেন্টস করল, যা আমাদের দারুণভাবে হতবাক করেছে। একজন লোক একটা মিথ্যা বক্তব্য দিলে পুরো দেশের মানুষ তার পিছনে চলে যাবে?”
তিনি জানান, সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর ওই অভিযোগ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। তারা এর ব্যাখ্যা দেবেন।
“ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সবকিছুর প্রমাণ দেবে। আমরা তো সরকারি কর্মকর্তা, আমাদের বিষয়ে তো নিশ্চয় সেই সিদ্ধান্ত হবে যদি আমরা সঠিকভাবে কাজ না করি। কিন্তু যিনি বা যে প্রতিষ্ঠান বা যে ব্যক্তি ওই মন্তব্য করে আমাদের সমগ্র চিকিৎসক সমাজ ও আমাদের এই বৃহৎ প্রতিষ্ঠানকে অপদস্ত করেছে, আমি মনে করি তাকেও সামনে আনা উচিত।
প্রতিদিনবিডি২৪/সাইকা;
Leave a Reply